শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৩

করিমগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী নিয়োগে দূর্নীতি ইউএনও-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আদালতে স্থিতাবস্থার আদেশ


কিশোরগঞ্জ  প্রতিনিধি:-
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী নিয়োগে ব্যপক দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলার শুনানিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জনার্কীন আদালতে এ আদেশ দেন। মামলায় আপত্তি দাখিল ও শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য বিবাদী স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ এন ও) মোহাম্মদ গোলাম কবির, নিয়োগ কমিটির সভাপতি সোলায়মান ভুঁইয়া ওরফে দানিজ ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা: খায়রুনন্নেছা  সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে  এ আদেশ জারী করেন জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবি।
বাদী পক্ষের আইনজীবি নির্মল চন্দ্র পাল জানান, বিজ্ঞ আদালতের এ আদেশের ফলে মামলার বিবাদীগণ চাকুরী প্রার্থী মো: আসাদ মিয়াকে  বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে আর নিয়োগ দিতে পারবেন না। তার বরাবরে কোন নিয়োগপত্রও ইসু করা যাবেনা। সে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে যোগদান কিংবা বেতন ভাতাও তুলতে পারবেন না।
       সূত্র মতে, করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে লোক নিয়োগের জন্যে বিগত ১৪ ফ্রেরুয়ারী জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। একই পদে ৪ জন প্রার্থী ৩০ এপ্রিল মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন প্রার্থী মো: শাহনুল ইসলাম (সানাল)।                               মনোনীত কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের সব সদস্যের কাছ থেকেই সে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল। কিন্তু নিয়োগে তার নাম চূড়ান্ত না করে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী মো: আসাদ এর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। আবেদনে প্রার্থী মো: আসাদ তার প্রকৃত জন্ম তারিখ গোপন করে ১০/০৭/১৯৮৬ তারিখের জন্ম সনদ দাখিল করেছে। তার এ কারচুপি ধরা পড়ে ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে। জন্ম সনদে তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ১০/০৭/১৯৮০ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে ০৭/০৮/১৯৮০ইং লিপিবদ্ধ আছে। এতে তার বর্তমান বয়স ৩২বছরের উর্ধে হওয়ায় নিয়োগ বিধি মতে আবেদন খারিজ যোগ্য। এ মর্মে প্রার্থী সানাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন কাজে আসেনি। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের মাধ্যমেই এ পদে আসাদকে নিয়োগ দেয়ায় বিক্ষুদ্ধ প্রার্থী মো: শাহনুল ইসলাম (সানাল) বাদী হয়ে গত ২ ফ্রেরুয়ারী করিমগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ্ আদালতে মো: নং ১১৭/১৩ রুজু করেন । সাথে নিয়োগপ্রক্রিয়ার উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞারও আবেদন করেন। নোটিস পেয়েও বিাবদীগণ মূল মামলায় আপত্তি দাখিল করেননি। শুনানিতে অংশ নেননি। শুধু সময় নিয়ে তারিখের পর তারিখ ঘুরিয়ে সময়ক্ষেপন করেন। ফলে বিজ্ঞ-আদালত বৃহস্পতিবার ধার্য্য তারিখে বিরোধীয় বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। শিক্ষা অফিসের অন্য একটি সূত্র বলেছে, কয়েক মাস আগেও করিমগঞ্জের নোয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে লোক নিয়োগে অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল । তদন্তে  এ নিয়োগ বাতিল হয়। একই ধরনের অভিযোগে ইন্দা-চুল্লি স: প্রা: বিদ্যালয়ে ওই পদে লোক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে নোয়াবাদ এবং হাইধনখালী স: প্রা: বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম প্রহরী পদে লোক নিয়োগে ব্যাপক  দূর্নীতি ও অনিয়মের কারনে নিয়োগ বন্ধ-সহ আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সব কয়টি মামলায় দূর্নীতির অভিযোগ এনে এই ইউএন কে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মদ গোলাম কবির বলেন, বিধি অনুযায়ী স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আসাদকে যোগ্য হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন আমি তার পক্ষেই নিয়োগ অনুমোদন করেছি। এব্যাপারে আদালতে মামলা হযেছে শোনেছি। কারন দর্শানোর নোটিশের বিষয়ে সময় চাওয়া হয়েছে। মামলার ধার্য তারিখে জবাব দেওয়া হবে জানান তিনি।
উপজেলার চেয়ারম্যান মো: জনাব আলী বলেন, উক্ত নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, কারো পক্ষে সুপারিশও করিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন