সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৩

নিহত যুবলীগ নেতা মিল্কির সহযোগী সাগরের স্ত্রী লোপার জবানবন্দী

কিশোরগঞ্জ পাতাঃ মিল্কি হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও নাসির উদ্দিন পিন্টুর নাম বলেছেন মিল্কির সহযোগী মারুফ রেজা  সাগরের স্ত্রী ফহিমা ইসলাম লোপা। তিনি বলেছেন, তারেক আমাকে বলত বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলেও কেউ কিছু করতে পারবে না। সে আমাকে বলেছে, তার স্ত্রীর বড় বোনের শশুর বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার। স্ত্রীর চাচতো বোনের স্বামী নাসির উদ্দিন পিন্টু। তাই তার কোনো ভয় নেই।’ রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান তার এ স্বীকারোক্তি সংরক্ষণ করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
 
গত শনিবার র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যরা (র‌্যাব) লোপাকে গ্রেপ্তারের পর রবিবার আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তি গ্রহণের আবেদন করেন।
 
জবানবন্দিতে লোপা বলেন, ‘মতিঝিলের এডিবি কলোনির আধিপত্য ও টেন্ডার নিয়ে তারেক ও মিল্কির মধ্যে বিরোধ ছিল। তারেক এক মাস আগে মিল্কির অবস্থান জানাতে আমার কাছে সাহায্য চায়। আমার স্বামী সাগর সব সময় মিল্কির সঙ্গে থাকতো বলে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারতাম। সাগর মিল্কির সঙ্গে থাকায় তাকে সব সময় পেতাম না। এ নিয়ে মিল্কির ওপর আমার রাগ ছিল। আমি মানসিকভাবে খারাপ অবস্থায় ছিলাম। তারেক ওই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আমাকে সাহায্য করতো।’
 
তিনি বলেন, ‘মিল্কি তারেককে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলে মাস খানেক আগে তারেক আমাকে জানান। তারেক বলে, তাকে বেঁচে থাকতে হলে মিল্কিতে হত্যা করতে হবে। এরপর জামায়াতের এক হরতালের সময় তারেক মিল্কিকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। মিল্কিও তারেককে মারার জন্য শেওড়াপাড়ার একজনকে ভাড়া করে বলে জানতে পারি।’
 
‘তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল টমেটো বাবু। তারেকের স্ত্রী শিলার সঙ্গেও আমার পরিচয় ছিল। তারেক বলতো, আমার কাজ নিয়ে সে কনফিডেন্স। মিল্কিকে হত্যা করলেও আমার কিছু হবে না। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলেও কেউ কিছু করতে পারবে না। তারেক আমাকে বলেছে, তার স্ত্রীর বড় বোনের শশুর বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার। স্ত্রীর চাচতো বোনের স্বামী নাসির উদ্দিন পিন্টু। তারেকের পাটনার রুমির ফুফাতো বোনের স্বামী তারেক জিয়া। তাই তার কোনো ভয় নেই।’
 
লোপা বলেন, ‘ঘটনার দিন ২৯ জুলাই রাত ১১টার দিকে সাগরকে ফোন করে বাসায় আসতে বলি। কিন্তু সাগর জানায়, তারা গুলশানের বিপণিবিতান শপার্স ওয়াল্ডের দিকে যাচ্ছে। তখন তারা তিতুমির কজেলের রাস্তায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি তারেককে মিল্কির অবস্থানের কথা জানাই এবং তারেকের কাছে জানতে চাই সে আসলেই কাজটি (হত্যা) করবে কি না। তারেক জানায়, দেখি কি করা যায়। এরপর রাত ১টায় সাগার ফোন করে জানায়, মিল্কিকে কে বা কারা গুলি করেছে। সাগর মিল্কির স্ত্রীকে নিয়ে শাহাবুদ্দিন হাসপাতালে যেতে বললে সেখানে যাই। সেখানে মিল্কিকে দেখে আমার খারাপ লাগে।’
       
উল্লেখ্য, এর আগে এ মামলায় আরো ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
তারা হলেন-তুহিনুর রহমান, সৈয়দ মোস্তফা আলী রুমি, মোহাম্মদ রাশেদ মাহামুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ সুজন হাওলাদার ও জাহাঙ্গীর মণ্ডল।
 
গত ৩১ জুলাই উক্ত আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে উক্ত আসামিরা রিমান্ডে আছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন